খেলা

কাজটা কঠিন কিন্তু অসম্ভব না-বলছেন তামিম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫৪

কাজটা কঠিন কিন্তু অসম্ভব না-বলছেন তামিম

হাল ছাড়তে রাজি নন তামিম ইকবাল

হাতে বাকি শেষদিনের পুরোটা। উইকেট অক্ষত ৭টি। এখনো ইনিংস পরাজয় এড়াতে চাই আরো ১৪১ রান। শেষদিনের উইকেট নিশ্চয়ই ব্যাটসম্যানদের পক্ষে কথা বলবে না! ওয়েলিংটন টেস্টের শেষদিনে এমন দুরূহ কঠিন পরিস্থিতির সামনে দাড়িয়ে বাংলাদেশ। তবে বিপদের সামনে দাড়ানো দলকে ঠিকই সাহস যোগাচ্ছেন তামিম ইকবাল। টেস্ট সিরিজে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান বললেন-‘মানছি কাজটা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব না।’

ঠিক কি ভিত্তি ও যুক্তিতে তামিম এই আশায় বিশ্বাস রাখছেন সেই প্রশ্নের উত্তরে ব্যাখাটা এমন-‘এখান থেকে ম্যাচ বাঁচানো আমি অবশ্যই বলবো কঠিন। তবে ক্রিকেটে যে কোন কিছুই তো সম্ভব। আমাদের সাত উইকেটে এখনো অক্ষত। রিয়াদ ভাই, লিটন তো এখনো ব্যাটিংয়েই নামেনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সময়টা হলো শেষদিনের প্রথম সেশন। এই সময়টায় যদি আমরা কোন উইকেট না হারাই অথবা খুব বেশি হলেও যেন একটা উইকেট পড়ে-এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলে খুবই ভাল হয়। মানছি ম্যাচ বাঁচানোর কাজটা কঠিন। তবে সম্ভব!’

এই ম্যাচ বাঁচাতে হলে এখন দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের কি করতে হবে সেটা জানার জন্য নতুন কোন কোচিং পদ্ধতির প্রয়োজন নেই। ব্যাটসম্যানরা জানেন তাদের কি করতে হবে। সেই প্রসঙ্গে তামিম জানালেন-‘ সৌম্য  ও মিঠুনের কাছ থেকে এখন আশা তো সবারই একটাই-লম্বা সময় ধরে যেন ওরা ব্যাট করতে পারে। অন্য কোন কিছু আশা করার জায়গা নেই। চতুর্থদিন শেষ বিকালে যদি তিন উইকেট না পড়ে অন্তত একটা উইকেট পড়তো আমাদের, তাহলে আমরা ম্যাচ ড্র করার জন্য খুব ভাল একটা পরিস্থিতিতে থাকতাম। কিন্তু এখন তিনটা উইকেট পড়ে গেছে। আমাদের ব্যাটিং লেজও বেশ লম্বা। কাজটা কঠিন কিন্তু অসম্ভব না।’

সবুজ ঘাসে মোড়া উইকেট। বৃষ্টিস্নাত কন্ডিশন। চারধারের বাতাস। পেস বোলিংয়ের জন্য একেবারে আদর্শ পরিবেশ। এমন উইকেটে নিউজিল্যান্ডের পেসাররা দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখালেও চতুর্থদিন বাংলাদেশের বোলিং পুরোই যেন চুপসে যাওয়া বেলুন!

এবার দলের পেস বোলারদের পাশে ঢাল হয়ে দাড়ালো তামিমের চওড়া ব্যাট-‘বোলারদের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে আমি বলবো এটা ছিলো ভাল মন্দের একটা মিশেল। কিছু সময় ছিলো যখন তারা খুব ভালো বোলিং করেছে। আবার এমন কিছু ওভার কেটেছে যেখানে তাদের যা করা উচিত ছিলো সেটা করেনি। হয়তো তারা সাফল্য পায়নি। কিন্তু অভিজ্ঞতা তো পেয়েছে। মনে রাখতে হবে  টেস্ট বোলিংয়ে আমাদের এই তিনজনই খুবই নতুন। আর আমাদের প্রতিপক্ষের দিকে তাকান। তাদের অন্তত দুজনের তো আড়াই শ’ করে টেস্ট আছে! আমাদের বোলাররা এই সফর থেকে শিখছে। অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছে। যদি এখান থেকে শিখে তারা সামনের দিনে ভাল করতে পারে তবে সেটা হবে আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট।

রস টেলর ২০০ রান করেছেন। অথচ সকালের শুরুতেই তিনি ক্যাচ দিয়েছিলেন মাত্র ২০ রানে। তাও আবার একওভারে দু’বার ক্যাচ! দুটোই মাটিতে ফেলে দিলেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। প্রথমবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, এক বল পরে একই ভুল করলেন স্লিপে সাদমান ইসলাম। ওয়েলিংটনে বাংলাদেশের বিপদে পড়ার অন্যতম কারণও হলো এই ক্যাচ মিস। ক্যাচ মিসের সেই ‘দুর্ঘটনাকে’ মোটেও আড়াল করার কোন চেষ্টা করলেন না তামিম-‘এটা অবশ্যই দুঃখজনক ঘটনা। আর এমন একজনের ক্যাচ মিস হয়েছে, তাও আবার একই ওভারে দুবার। সেই ব্যাটসম্যানই ২০০ রান করে তবেই থেমেছে। সন্দেহ নেই রস টেলরকে সকালের সেই সময়টায় আউট করতে পারলে বা ওদের আরো কয়েকটা উইকেট তুলে নিতে পারলে এই ম্যাচে এখন আমাদেরকে আরেকটু কম সময় ব্যাটিং করা লাগতো। ক্যাচ আসলে যে কেউ মিস করতে পারে। আমি নিশ্চিত যারাই ক্যাচ মিস করেছে তাদের কাছে ব্যাপারটা খারাপই লাগছে। এটা ক্রিকেটের অংশ ধরে নিতেই হবে। ক্যাচ মিস আমাদের হচ্ছেই। আমি আর এটা নিয়ে কি বলবো?’

শব্দ, ভাষা হারিয়ে ফেলছেন তামিমও..!

২০ রানে ফিরতে পারতেন যে ব্যাটসম্যান তিনি ক্যাচ মিসের সুযোগে ‘জীবন’ পেয়ে করলেন ২০০!

রস টেলরের সৌভাগ্য আর বাংলাদেশের দুভার্গ্য!