নারীলিপ্সু এক চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস প্রশিক্ষকের গল্প
প্রধান সহযোগী সংবাদ উপস্থাপিকা স্ত্রী
প্রকাশিত :
০১ জানুয়ারী ২০২৪, ৪:৪২:৪৩
আপডেট :
০১ জানুয়ারী ২০২৪, ৪:৪২:৪৩
একজন শিক্ষকের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ হয় তার শিক্ষার্থী। কিন্তু সেই শিক্ষা গুরুর কাছে জ্ঞান অর্জন করতে এসে সম্ভ্রম হারাতে হচ্ছে একাধিক নারী শিক্ষার্থীর। এমন ঘটনাই ঘটিয়েছেন ক্রিয়েটিভ সেন্টার ফর প্রোফেশনাল ডেভলপমেন্টের ট্রেইনার ইমরুল কায়েস। নারীলিপ্সু এই চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস প্রশিক্ষকের নিপিড়নের শিকার হয়েছেন একাধিক নারী শিক্ষার্থী। এছাড়াও স্ত্রী এবং বেশ কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে গড়ে তুলেছেন বিশাল পাপের পাহাড়। নারী নিয়েও অসামাজিক কার্যক্রম করার সময় পুলিশের হাঁতে পড়েছেন এই ইমরুল।
একসময় লবিং করে ব্যাংকার পেশায় থাকা ইমরুল কায়েস শুরু করে প্রশিক্ষণ একাডেমি। এখান থেকেই তার ভাগ্য বদলাতে শুরু করে। কারণ এখান থেকেই তিনি খুলে বসেন নানা ধরনের দূর্নীতির হাতিয়ার। দেশের অর্থনৈতিক খাতে শুরু করে চরম দূর্নীতি। আর কাজ আদায়ের জন্য তিনি ব্যবহার করতে শুরু করেন তার নিজেরই স্ত্রী চ্যানেল আইয়ের সংবাদ উপস্থাপিকা কাওসার জাহান মেরিনাকে। আর নিজে নারী নিয়ে ফুর্তি করতে চলে যেতেন ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন রিসোর্টে।
এমনই এক অসমাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় শিরিন নামে এক তরুনীসহ ঢাকার ৩০০ ফিট এলাকার একটি রিসোর্ট থেকে পুলিশ আটক করে। প্রথম এই শিরিনকে স্ত্রী পরিচয় দিলেও পরে পুলিশের চাপে শিকার করে শিরিন মূলত তার ছাত্রী। যাকে ফুঁসলিয়ে এই রিসোর্টে নিয়ে এসেছে ইমরুল। এরপর পুলিশকে ম্যানেজ করে সেদিনের মত রক্ষা পায় এই নারীলিপ্সু ইমরুল।
এই ঘটনা জানাজানি হলে একাধিক শিক্ষার্থী মুখ খুলতে শুরু করে। আমাদের কাছেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত তিনজন নারী ইমরুলের দ্বারা যৌন হেনস্থা হবার কথা স্বীকার করেন। যারা ইমরুলের ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না। কারণ ইমরুল সবাইকে বলে বেড়ায়, পুলিশ-ডিবি তিনি পকেটে রাখেন। তার স্ত্রীর পরিচয় আছে অনেক বড় বড় মানুষের সাথে। যাদের দিয়ে যে কাউকে শায়েস্তা করতে পারেন তিনি।
এই ঘটনার সত্যতা আমরাও পেয়েছি। এই ঘটনার অনুসন্ধানের সময় তিনি তার স্ত্রীকে দিয়ে আমাদেরকেও ম্যানেজের চেষ্টা করেছেন। অনেকটা তার স্ত্রীকে নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন ইমরুল। বোঝাতে চেয়েছেন তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচারে বিরত থাকলে তার স্ত্রীর বিশেষ সঙ্গ পাওয়া যাবে। যেখান থেকেই আমরা নিশ্চিত হই, তিনি তার সুন্দরী স্ত্রীকে ব্যবহার করেন ক্লায়েন্ট আর অন্যায় কাজ সামলানোর জন্য।
এদিকে তার অবৈধ টাকায় গড়া সম্পদের খোঁজ নিতে গিয়ে আমরা জানতে পারি, এক সময় খুব কষ্টে দিন কাটানো ইমরুল এখন প্রচুর সম্পদের মালিক । যার মধ্যে মাওয়ায় ১৮ কাঠার প্লট, মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাট, মাওয়ায় ৪টি দোকানসহ ৩৯ লাখ টাকার একটি গাড়ি তিনি ব্যবহার করেন। যার পুরো টাকাই এসেছে অবৈধ পথে। প্রতি মাসে তার স্ত্রীকে ব্যবহার করে এমন অবৈধ আয়ের পরিমাণ ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। যার বড় অংশই অবশ্য তিই খরচ করে নারীদের নিয়ে ঢাকার আশেপাশের রিসোর্টে ফুর্তি করে। যার সবকিছুই জানেন স্ত্রী তবুও কিছু তিনি বলেন না। কারণ স্ত্রী সুখ খুঁজে নেন ইমরুলে টাকায় আর অন্য পুরুষের বিছানায়।
ইমরুলের এসব কুকীর্তির কথা তার অফিস ও আশেপাশের সবাই জানেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের তিন জন কর্মী আমাদেরকে জানান, ট্রেনিং নিতে আসা ছাত্রীদের সে টার্গেট করেন। এরপর দামি দামি গিফট দিয়ে তাদের ফুসলিয়ে ফাঁদে ফেলে। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে তাদের শারিরীক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। যদিও অফিস এবং তার পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন তিনি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত।
এই ধর্ষকের সহযোগীদের খুঁজতে গিয়ে এখন পর্যন্ত আমরা একজন সহযোগীর খোঁজ পেয়েছি । ফিনান্সিয়াল কনসালটেন্ট জালাল ভুঁইয়াই মরুলের অন্যতম সহযোগী। ইসলামের লেবাস পড়ে থাকা জালাল নিয়মিত ইমরুলের থেকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন। পাশাপাশি জালালের বিরুদ্ধে রয়েছে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে উষ্কানি দেয়ার প্রমাণও মিলেছে। সাবেক এই শিবির নেতাকে নিয়ে আসছে আমাদের দ্বিতীয় পর্ব।