ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

ভোটে কারচুপি হলে এক প্যানেলরই সবাই পাস করতো: পীরজাদা হারুন

ভোটে কারচুপি হলে এক প্যানেলরই সবাই পাস করতো: পীরজাদা হারুন

পীরজাদা শহীদুল হারুন

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২২ | ০৮:৫৫ | আপডেট: ০৩ মে ২০২২ | ০৯:৫৫

মঙ্গলবার (৩ মে) ‘চ্যানেল 24 অনলাইন’-এর সঙ্গে ব্যক্তিগত, ক্যারিয়ার ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে আলোচনার সময় এসব কথা বলেন পীরজাদা শহীদুল হারুন।

পীরজাদা শহীদুল হারুন

এর আগে পীরজাদা শহীদুল হারুন বলেন, ধানমন্ডির মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ে বাসায় এসে সবার সঙ্গে কথা হলো। অনেকের সঙ্গে ফোনে কথা হলো। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। এরপর বাসায় ঈদের রকমারি খাবার খেয়ে এখন টিভির সামনে বসে আছি। নাটক দেখব। এবার আমার অভিনীত আট-দশটি নাটক প্রচার হচ্ছে বিভিন্ন টেলিভিশনে।

নাটকের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সবগুলো নাটকের নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। এর মধ্যে ‘বস আই হেট ইউ’, ‘বউয়ের বয়স ১৬’, ‘লাভ সার্কেল’। তবে ‘বউয়ের বয়স ১৬’ নাটকটির কথা না বললেই নয়।

নাটকটির বিষয়ে তিনি বলেন, নাটকটির সঙ্গে বাস্তবতার কিছু মিল রয়েছে। এতে তানজিন তিশা আমার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সে। কম বয়সী, ওর বয়স ১৬। নাটকে মোশররফ করিমের সঙ্গে বিয়ে হয় তিশার। মোশাররফ করিমের বয়স চরিত্রের প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হয়েছে। এখানে তাদের স্বামী-স্ত্রীর দু’জনের মধ্যে বয়সের অসামঞ্জস্য দেখানো হয়েছে।

ছেলের সঙ্গে পীরজাদা শহীদুল হারুন

পীরজাদা হারুন আরও বলেন, বিয়ের পর তাদের জীবনে অসামঞ্জস্যতা ও বৈরীভাব দেখা যায়। কিন্তু একটা সময় তারা উপলব্ধি করে সম্পর্কে আসলে বয়স নয়, ভালোবাসাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর বয়সের পার্থক্য যে ভালোবাসায় বাধা হতে পারে না এটা বুঝতে পারে তারা।

এই চলচ্চিত্র অভিনেতা ছোট বেলার ঈদ আনন্দের কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেই সময় ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই মনের মধ্যে বেশ উৎসাহ থাকতো, কবে চাঁদ উঠবে, কবে ঈদ হবে। অপেক্ষায় থাকতাম চাঁদ দেখার জন্য। এরপর ঈদের নতুন জামা-কাপড় থাকতো। তা কিছুক্ষণ পর পর বের করে দেখতাম। পোশাকগুলো আলনায় রেখে দিতাম। কখনো আবার নতুন জুতা বিছানার মধ্যে রেখে দিতাম।

ঈদগাহ মাঠে পীরজাদা শহীদুল হারুন

ঈদের চাঁদের বিষয়ে তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন যখন চাঁদ উঠতো তখন সব বন্ধুরা মিলে অনেক রাত পর্যন্ত ঈদ ঈদ বলে মিছিলের মতো করতাম। ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ এই গানটাও সবাই একসঙ্গে গাইতাম। আবার রাতে যখন ঘুমাতাম তখন মনে হতো দ্রুত সকাল হয় না কেন। পৃথিবীর সবথেকে বড় রাত মনে হতো সেই রাতকে। এরপর সকাল হলে গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পরে মা-বাবাসহ সবাইকে সালাম করতাম।

বর্ষীয়ান এই অভিনেতা বলেন, সবাইকে সালামের পর অপেক্ষায় থাকতাম কখন তারা পকেটে বা পার্সে হাত দেয়। এরপরই তো আমাদের সালামি দেবে। সালামি নিয়ে বাবার সঙ্গে ময়মনসিংহ আঞ্জুমান কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে যেতাম। নামাজ শেষে বাসায় ফিরে সব বন্ধুরা ঘুরে বেড়াতাম। ওখানে জয়নুল আবেদীন পার্ক আছে, সেখানে যেতাম।

তিনি বলেন, ছোট বেলায় ঈদের দিন পুরো স্বাধীনতা ছিল আমার। অন্যান্য দিন সময় নির্ধারণ করা থাকতো যে, সন্ধ্যার মধ্যে বাসায় ফিরতে হবে। কিন্তু ঈদের দিন পুরো স্বাধীনতা থাকায় সেদিন রাত ১০টা বা ১১টার সময়ও বাসায় ফিরতাম।

পীরজাদা শহীদুল হারুন

এই অভিনেতা আরও বলেন, ঈদের দিন দুপুরের পর সব বন্ধুরা একসঙ্গে সিনেমা দেখার জন্য যেতাম। সেখানে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। খুব কষ্ট হতো আমাদের। যারা ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি করতো তারা লাইনে এসে অনেক ধাক্কাধাক্কি করতো। এক পর্যায়ে তাদের কাছ থেকে বাধ্য হয়ে ব্ল্যাকে টিকিট কিনে সিনেমা দেখতাম।

পীরজাদা বলেন, ছোট বেলার দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে। এখন তো আর সেই ছোট বেলায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু এখন ঈদের দিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখা হয় না। বাসায় বসে সিনেমা দেখি। ঈদের পরে অবশ্য প্রেক্ষাগৃহে যেয়ে দেখা হয়। তবে এবার ঈদের পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে শাকিব খানের ‘বিদ্রোহী’ সিনেমাটা দেখব আমি। শাহীন সুমন পরিচালিত ‘বিদ্রোহী’ সিনেমাটি দেশে সর্বাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এটা আজ না পারলেও আগামীকাল দেখব।

এছাড়াও এই অভিনেতা চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, আগেও বলেছি এখনো বলি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। এখানে একজনের ভোট অন্য কেউ দিতে পারেনি। যার যার ভোট সে সে দিয়েছে। এখানে একটা ব্যালট পেপারে দশটি পদ ছিল। নির্বাচনে যদি কোনো কারচুপি হতো তাহলে পুরো প্যানেলে ভোট যেত। প্যানেলের সবাই পাস করতো বা ফেল করতো। ভোটের ফলাফলে তা কিন্তু হয়নি।

পীরজাদা শহীদুল হারুন

নির্বাচন নিয়ে তিনি আরও বলেন, ভোটের সময় ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুন প্যানেলের রিয়াজ সারাক্ষণ ছিল। গুলজারও উপস্থিত ছিল। যদি ভোটে বা কোনো প্যানেলে কারচুপি হতো তাহলে এক প্যানেলেরই সবাই পাস করতো। তাতো হয়নি। দেখা গেছে, নিপুন প্যানেলেরই ৬ জন পাস করেছে আর মিশা-জায়েদ খান প্যানেলের ৪ জন পাস করেছে।

✪ আরও পড়ুন: ‘পরিবার থেকে আলাদা হওয়ার পর ঈদের আনন্দ বুঝতে পারিনি’

পীরজাদা হারুন নির্বাচন পরবর্তী অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, ভোটে হারলে অনেকে সেই কষ্ট সহ্য করতে পারে না। তখন অনেকে নির্বাচনে অনিয়ম, ভোটে কারচুপি, মিডিয়া কারচুপিসহ নানা অভিযোগ তুলে। এখন বিষয়টি যেহেতু আদালতে গেছে সেখানেই প্রমাণ হবে পুরো বিষয়টি আসলে কী।

এছাড়া এখন সাধারণত সম্পাদকের পদের বিষয়টি যেহেতু সর্বোচ্চ আদালতে আছে সেখান থেকে রায় আসবে। রায় যার পক্ষেই আসুক আশা করি দু’জনই মেনে নেবে। এতো দিতে হয়তো তাদের সবার রাগ-অভিমান ও ক্ষোভ শেষ হয়েছে বলে জানান পীরজাদা হারুন।

সম্পর্কিত

আরও পড়ুন

×