ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাবাজার ঘাটে রোদে-ঘামে বাইকারদের অসহনীয় দুর্ভোগ

বাংলাবাজার ঘাটে রোদে-ঘামে বাইকারদের অসহনীয় দুর্ভোগ

বাইকারদের অসহনীয় দুর্ভোগ

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২২ | ১২:৪৮ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ | ১৭:৫৯

শুক্রবার (৬ মে) দুপুর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাবাজার নৌরুটের চার নাম্বার ঘাটে পল্টুনে দাড়িয়েছে আছে অন্তত শতাধিক মোটরসাইকেল আর পল্টুন থেকে প্রায় ছয়শ মিটার পর্যন্ত অন্তত এক হাজারের ওপরে বাইক দাড়িয়ে আছে। কেউ কেউ বাইকের উপরে অস্থায়ী কিছু একটা দিয়ে শরীর রোগ থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। অনেকে পল্টুনের উপরের রাস্তায় দাড়িয়ে ঘাম ঝড়াচ্ছে। এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর পর একটি রো রো ছোট ফেরি ঘাটে আসছে। তাতে দেড় থেকে পৌনে দুইশ মোটরসাইকেল জায়গা করে নিচ্ছে। বাকিরা আবার অপেক্ষায় রয়েছে। এভাবে অনেকেই সকাল ৮টায় এসে দুপুর ৪টার দিকেও ফেরিতে উঠতে পারেনি। এভাবেই রোদ ঘামে আর ঘাটের ময়লা আবর্জনার দুগন্ধ সাথে নিয়ে কর্মস্থলে ছুঁটছে।

বরিশালের গৌনদী থেকে আসার কামরুল হাসান বলেন, ‘ঈদে বাইক নিয়ে আসছিলাম আনন্দে করে ঢাকায় ফিরবো। কিন্তু ঘাটের যে অসহনীয় দুর্ভোগ তাতে পুরো আনন্দই মাটি হয়ে গেলো। এতো কষ্ট আমি কখনোই পাইনি। সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারি নাই। দেড় থেকে দুই ঘন্টা পর পর একটি ছোট ফেরি আসে, তার মধ্যে তিন-চার মাইক্রো আর প্রাইভেটকার থাকে। একশ বাইকও যেতে পারে না।’

উজ্জ্বল হোসেন নামে আরেক বাইকার বলেন, ‘ফেরি কর্তৃপক্ষের সিস্টেমের ভুলের কারণে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা অন্য ঘাট থেকে মাইক্রো আর প্রাইভেটকার নিয়ে চার নাম্বার ঘাটে আসে। এতে দুই ঘাটে লোড-আনলোড হতে অন্তত এক ঘন্টা সময় বেশি লাগে। ফলে পারাপার হতেও বেশি সময় লাগে। যদি এক ঘাটের জন্যে একটি ফেরি মটরবাইকারদের জন্যে রাখতো, তাহলে এতো দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।’

বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি থেকে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকেই দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে বাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে কর্মস্থলমুখো যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে আসতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঘাট এলাকায় যাত্রীদের ভীড়ও বাড়তে থাকে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলীয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চ ও স্পীডবোট ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ন। লোডমার্ক অনুযায়ী লঞ্চগুলো যাত্রী পারাপার করছে। আর স্পীডবোটে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এরুটে রোরো ফেরি এনায়েতপুরী, বেগম সুফিয়া কামাল, বেগম রোকেয়া, কেটাইপ ফেরি কুঞ্জলতা, ক্যামেলিয়াসহ ৫টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করছে বিআইডব্লিউটিএ।
 
ফেরিগুলোতে সাধারন যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরী যানবাহন, কাঁচামালবাহী গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। তবে সীমিত সংখ্যক ফেরি চলাচল করায় ঘাট এলাকায় যাত্রীদের ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। পারাপারের অপেক্ষায় ঘাট এলাকায় দুই শতাধিক যানবাহনের লাইন সৃষ্টি হয়েছে। তীব্র গরমে দীর্ঘসময় ঘাটে আটকে থেকে নারী, শিশুসহ যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
 
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, এ রুটে ৫টি ফেরি দিয়ে যাত্রী, জরুরী গাড়ি ও কাঁচামালবাহি গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। কিছু গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা সিরিয়াল অনুযায়ী সকল গাড়িই পারাপার করছি। আর চার নাম্বার ঘাট দিয়ে শুধুমাত্র মটরবাইক পার করছি। প্রতিটি বাইকের জন্যে ৭০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। যদি কেউ বেশি ভাড়া চায়, তাহলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করছি।

আরও পড়ুন

×