ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

‘চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে মা আজরাইল আসতেছে’

‘চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে মা আজরাইল আসতেছে’

ছবি: সংগৃহীত

লক্ষীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২২ | ১২:২৬ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ | ১৭:৫৯

এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ছেলেকে হারিয়ে চোখে মুখে অন্ধকার দেখেছে বাবা-মা। ছেলের মরদেহটি দেশে আনতে আহাজারি করছে অসহায় পরিবার।

আরও পড়ুন: শর্টফিল্মে অভিনয়ের প্রলোভনে প্রতিবন্ধী যুবককে রাতভর দলবেঁধে বলাৎকার

আবদুর রহমান লক্ষ্মীপুরের কমলগর উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের উত্তর চরলরেন্স গ্রামের বাসিন্দা। ১ মে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের নিকটতম আল হারমোলিয়াহ এলাকার এক ছাগলের খামার (কর্মস্থল) থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে সেখানকার পুলিশ। 

সৌদি কর্মরত আবদুর রহমানের দুলাভাই মো. ইউছুফের বরাত দিয়ে পরিবারের জানায়, আবদুর রহমানের সঙ্গে সুদানি এক সহকর্মীর ঝগড়া হয়েছিল। ঝগড়ার একদিন পর তার রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা ইউছুফকে জানিয়েছে আবদুর রহমানকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু মরদেহ রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গাড়ি চাপায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে সেখানকার মালিকপক্ষ। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এক সৌদি নাগরিক ও একজন সুদানি নাগরিককে আটক করে৷ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দিয়েছে বলেও জানান নিহতের পরিবার।

নিহতের মা লাকী বেগম জানায়, সৌদিতে ঈদের আগের দিন বিকেলে ছেলের সঙ্গে তিনি মোবাইলফোনে কথা বলছিলেন। এরমধ্যেই হঠাৎ করে আবদুর রহমান চিৎকার দিয়ে বলে উঠে মা 'আজরাইল' আসছে। তাৎক্ষণিক ফোনকল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বারবার ফোন দিলেও কল রিসিভ করা হয়নি। বাড়ি থেকে চেষ্টা চালিয়েও তার সঙ্গে টানা দুই দিন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এতে মেয়ে জামাই ইউছুফকে আবদুর রহমানে কর্মস্থলে পাঠানো হয়। সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার মরদেহ দেখতে পায় ইউছুফ। 

পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে স্থানীয় এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ভালো চাকরীর আশায় আবদুর রহমান সৌদিতে পাড়ি দেয়। কিন্ত সেখানে গিয়ে জানতে মরুভূমিতে উট চড়ানো হচ্ছে তার চাকরি। এ কাজ তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবুও বহু কষ্টে তিনি ২ বছর কাটিয়েছেন। করোনার সময়ও তার কোন ছুটি ছিল না। এরমাঝে কারণে অকারণে মালিকপক্ষ তাকে মারধর করতো। পরে অতি নির্যাতনে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। যুক্ত হন নতুন আরেকটি কাজে। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা জেনেছি। তাদেরকে প্রয়োজনীয় আইনী সহায়তা দেওয়া হবে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজনের আমরাও যোগাযোগ করবো।

এ ব্যাপারে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। মরদেহ দেশে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হব। তবে পরিবার থেকে এখনও কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

সম্পর্কিত

আরও পড়ুন

×