ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

সবাই মেনে নিলে দেশে প্রধান মুফতির পদ হতে পারে: জাতীয় মসজিদের খতিব

সবাই মেনে নিলে দেশে প্রধান মুফতির পদ হতে পারে: জাতীয় মসজিদের খতিব

মুফতি রুহুল আমীন

এম এ আহাদ শাহীন

প্রকাশ: ০১ মে ২০২২ | ১৪:২০ | আপডেট: ১৭ মে ২০২২ | ১৪:২৭

ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চ্যানেল24 অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন মুফতি রুহুল আমীন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক এম এ আহাদ শাহীন

প্রশ্ন: প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাই খতিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায়। আপনার অনুভূতি কী?
মুফতি রুহুল আমীন: আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি, যারা আমাকে এ পদে অধিষ্ঠিত করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।  

প্রশ্ন: ইসলামের খেদমতে জাতীয় মসজিদের খতিবের সমাজ, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণে কী কী ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে?
মুফতি রুহুল আমীন: সমাজে একজন আলেম ও মুফতির যে দায়িত্ব, খতিবের দায়িত্ব একই। পরকালে কিভাবে কামিয়াব হওয়া যায় মানুষকে সেই দিক নির্দেশনা দেবেন খতিব। আল্লাহর হুকুম আহকাম পালনের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জন করার রাস্তা দেখাবেন খতিব। আর জাতীয়ভাবে যখন যেটা হয় সেটাকে জাতির সামনে তুলে ধরা।    

প্রশ্ন: মিশর, সৌদি আরবসহ আরও কিছু মুসলিম দেশে প্রধান মুফতি (গ্র্যান্ড মুফতি) বা প্রধান ইমামের মতো পদ আছে। যারা ধর্মীয় বিষয়ে কোনো নতুন সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হলে তার ব্যাখ্যা ও সমাধান দেন। আমাদের দেশে তেমন কোনো পদ বা ব্যবস্থা নেই। কিন্তু আমাদের কি সেরকম একজনের প্রয়োজন আছে?
মুফতি রুহুল আমীন: আসলে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করে কিছু না বলে শরিয়ত সম্মত বা কুরআন সুন্নাহভিত্তিক নবীর আদর্শ যেটা সেটায় আমাদের আসল অনুসরণীয়। নবী করীম (সা.) এর যুগে তিনি বিজ্ঞ সাতজন সাহাবীকে ফকীহ হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। যখন মাসআলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো বিষয় সামনে আসতো তখন সাতজন বিজ্ঞ সাহাবী এর সমাধান দিতেন। আমাদের দেশেও রাষ্ট্রীয় আইন ধরে নিয়ে বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরাম যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফতোয়া দেন। যা আবহমান কাল ধরে চলে আসছে। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুসারে যেটা বাংলাদেশে আইন হিসেবে গণ্য হয়, বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরাম যা ফতোয়া দিয়ে আসছেন তারা সেভাবে দেবেন। এর সঙ্গে একজনকে যদি সবাই মিলে মানতে পারে তাহলে সেটা খারাপ না। সেটা করা যেতে পারে।  

প্রশ্ন: জাতীয় মসজিদের খতিব পদে যিনি থাকবেন তিনি বা তার বোর্ড দেশের ধর্মীয় সমস্যার সমাধানের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটি যেনো সবাই মেনে নেয়, দেশে এমন আইন থাকলে অনেক বিষয়ই সহজ হয়ে যাবে বলে অনেকে মনে করে, আপনি কি মনে করেন?
মুফতি রুহুল আমীন: আসলে শরীয়তের কোনো বিষয়ে আইন করে চাপিয়ে দিলে সেটা রাজনৈতিক কারণে হোক বা হিংসা বিদ্বেষের কারণে হোক, কোনো না কোনো কারণে সেখানে খুত দেখা গেলে তখন ভালোর চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। এটা নিয়ে আন্দোলন, এটা সেটা নানান কথা হবে। যদি সবাই মিলে করে, আর সরকার যদি সেটি মেনে নেয় তাহলে ভালো। জনগণ ভোট দিয়ে সরকারকে নির্বাচিত করে। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি একজনকে মেনে নেয় তাহলে উত্তম। কারও উপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়ার চাইতে কুরআন-হাদিসের আলোকে সব মুফতিয়ানে কেরামের সহযোগিতায় একটা সিদ্ধান্ত আসলে সবাই মেনে নেবে। এরকম যদি করা হয় তাহলে সেটা বেশি ভালো হয়। 

প্রশ্ন: সারাদেশে ইমাম মুয়াজ্জিনদের বেতন ভাতা নিয়ে বেশ জটিলতা আছে। তারা যেনো স্বচ্ছলভাবে চলতে পারেন সেজন্য বেতন ভাতার বিষয়ে একটি কাঠামো তৈরি করার কি দরকার আছে? 
মুফতি রুহুল আমীন: সরকারের পক্ষ থেকে যদি এরকম একটা ব্যবস্থাপনা থাকতো তাহলে অবশ্যই ভালো হতো। আংশিক হোক বা কোনো দিক দিয়ে হোক তাদেরকে যদি সহযোগিতা করা হতো এটা খুব ভালো একটা ধারনা এবং ভালো একটা প্রজেক্ট। যদিও এটা আস্তে আস্তে হলেও বাস্তবায়ন করা যায়। সেটা আমিও অনেক সময় চিন্তা করি যে আমাদের দেশে তারতম্য এত বেশি যে শহরের মসজিদগুলোর টাকা পয়সা অনেক জমে আছে। আর গ্রামে সেখানে ইমাম মুয়াজ্জিনদের দুই হাজার, তিন হাজার, চার হাজার, পাঁচ হাজার টাকার বেশি তাদের দেয়া হয় না। যেহেতু আমরা গরিব দেশ সবাই মিলে আমাদের কল্যাণের চিন্তা করতে হবে দেশ ও জাতির জন্য, ইসলামের জন্য। সবাইকে মিলে করতে হবে। সরকার কিছু অংশ দিলো, জনগণও কিছু অংশ দিলো সবাই মিলে যদি করা যায় এটা খুব সুন্দর হবে এবং এটা প্রয়োজন।     

সম্পর্কিত

আরও পড়ুন

×