ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

sss

গরিবের ফ্যানের টাকা ইউএনওর পকেটে

shoulder

গরিবের ফ্যানের টাকা ইউএনওর পকেটে

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৭:২৩ | আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ | ১১:৫৯

জানা যায়, এডিপির রাজস্ব তহবিল থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপকারভোগীদের জন্য ২৯টি ফ্যান ক্রয় ও বিতরণের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ফ্যান না কিনে ২৯টি ফ্যানের ভাউচার সংগ্রহ করে ও তা অনুমোদন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের একাধিক উপকারভোগীর অভিযোগ, শুধু কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে ওই টাকা পকেটে পুড়েছেন সদ্য বিদায়ী ইউএনও ফারজানা আলম। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বাবুল মিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রকল্পে স্বাক্ষর দিলেও টাকা উত্তোলন, ফ্যান ক্রয় ও বিতরণের বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।

 

২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উপজেলার কামালিয়াচালা আশ্রয়ণ প্রকল্পে চারটি, বহেড়াতৈল আশ্রয়ণ প্রকল্পে চারটি ও বহুরিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুটি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে আমতৈল আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৫টি ফ্যান উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া এলাকায় অনেক উপকারভোগী নিজের টাকায় ফ্যান কিনেছেন বলে উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ধীরেন চন্দ্র বর্মন জানান। তবে উপজেলা পরিষদ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপি উন্নয়ন তহবিল থেকে বরাদ্দ পাওয়া ১ লাখ টাকায় প্রধানমন্ত্রীর ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের জন্য ফ্যান ক্রয় ও বিতরণকরণ’ প্রকল্প থেকে ফ্যান ক্রয় বা বিতরণের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ২০০টি ঘরে দেড় মাস ধরে অনুসন্ধান করে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফ্যান না পাওয়া একাধিক উপকারভোগী জানান, ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের নাম ভাঙিয়ে সরকারের টাকা বরাদ্দ এনে ফ্যান বিতরণ না করে ওই টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন সদ্য বিদায়ী ইউএনও। উপকারভোগীরা ফ্যানের টাকা আত্মসাতের বিচার দাবি করেন।

ফ্যান ক্রয় ও বিতরণকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া ইউএনওর অনুরোধে প্রকল্প কমিটিতে স্বাক্ষর দিয়েছেন জানিয়ে বলেন, ফ্যান ক্রয় ও বিতরণের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ইউএনও ফ্যান কিনেছেন, বিতরণ করেছেন, নাকি টাকা তুলে নিয়ে গেছেন, এ বিষয়ে তাঁকে আর কিছুই জানানো হয়নি।

কর্মস্থলে থাকা অবস্থায় সমকালের অনুসন্ধানকালে ইউএনও ফারজানা আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বরাদ্দের সব ফ্যান আশ্রয়ণ উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান মজুমদার গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিলের টাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উত্তোলন করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি ও ইউএনও মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী সমকালকে বলেন, ‘কর্মস্থলে নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। দ্রুতই খোঁজখবর নিচ্ছি।’

উপজেলা চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। যদি না হয়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। বিষয়টি দ্রুত খোঁজ নিয়ে দেখছেন। আর্থিক অনিয়ম বা ব্যত্যয় হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×