ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

বেতন-ঈদ বোনাস না পেয়ে কারখানায় রাতযাপন, বিস্কুট-পানি দিয়ে ইফতার 

বেতন-ঈদ বোনাস না পেয়ে কারখানায় রাতযাপন, বিস্কুট-পানি দিয়ে ইফতার 

বেতন-ঈদ বোনাস না পেয়ে কারখানায় রাতযাপন

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২২ | ১০:৫৮ | আপডেট: ০১ মে ২০২২ | ১১:২৮

কারখানার  শ্রমিক স্বপ্না, রূপালী জানান, তারা এ কারখানায় সাড়ে চার বছর ধরে চাকরি করছেন। শনিবার লাঞ্চের পর কারখানায়  চলতি এপ্রিলের বেতন ও ঈদ বোনাস দেয়ার কথা ছিল।  আগের দিন তারা ঈদ উপলক্ষে নিজ বাড়ির মতো করে কারখানার ভেতরে রঙ্গিন কাগজ দিয়ে সাজিয়েছিল।  শনিবার সকালে তারা কারখানায় কাজে যোগ দেন। দুপুরের পর বেতন ও ঈদ বোনাস নিয়ে তারা বাড়ি যাবেন এমন আনন্দ-উদ্দীপনা কাজ করছিল তাদের মনে। কিন্তু কিছু বুঝতে না দিয়ে দুপুরের আগেই কারখানার কর্মকর্তারা আমাদের বেতন-বোনাস না দিয়ে একে একে গাঁ ঢাকা দেন । দুপুরের পর শ্রমিকরা যখন বেতন-বোনাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে তখন তারা জানতে পারেন তাদের পাওনা দেয়ার মতো কারখানার কেউ নেই। অথচ সকালে তারা সবাই কারখানায় ছিলেন । এ কথা শুনে তাদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়। বিক্ষোভ করেন তারা। সন্ধ্যায়ও বেতন-বোনাস না পেয়ে তারা দোকান থেকে বিস্কুট-পানি খেয়ে ইফতার করেন এবং উত্তরায় মালিকের বাসায় যান। সেখানেও তাকে না পেয়ে তারা রাত আড়াইটার দিকে কারখানায় ফিরে যান এবং সেখানেই রাতযাপন করেন। পানি ও শুকনা খাবার খেয়ে তারা রোজা রাখেন। রোববার সকালেও কারখানা অবস্থান করছেন।

আরও পড়ুন: তীব্রগরমে পিকআপের নিচে আশ্রয়, অতঃপর

গাইবান্ধার আজিজুল হক জানান, বেতন-বোনাস নিয়ে গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবো এমনটিই আশা ছিল। কিন্তু কারখানায় পাওনা নিতে গিয়ে আমাদের সেই আনন্দটাই মাটি হয়ে গেল। স্ত্রী-সন্তানেরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আর আমি কারখানায় বেতন-বোনাসের জন্য খেয়ে-না খেয়ে বসে আছি।  

কারখানার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন জানান, কারখানায় অর্থ সংকটের কারণে সাবলেটে কাজ করিয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেয়া হয়। কিন্তু এবার ঈদের আগে ব্যাংকিং সমস্যার কারণে টাকা তুলতে না পারায় কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিতে পারেননি। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. জাকির হাসান জানান, আমরাও মালিককে খুঁজছি। কিন্তু তাকে পাচ্ছি না। তাই রোববার দুপুরের মধ্যে বিকল্প উপায়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

গাজীপুরে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএসহ ৩৭টি বিভিন্ন কারখানায় এপ্রিলের ১৫দিনের বেতন এবং ২৮টি কারখানায় ঈদ বোনাস বকেয়া রয়েছে। ৩০ এপ্রিল রাত ৯টা পর্যন্ত গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের সরবরাহকৃত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের এসপি মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ৩০ এপ্রিল রাত ৯টা পর্যন্ত বিজিএমইএ’র ৭৭৮টি কারখানার মধ্যে ৮টি, বিকেএমইএ’র ১২৯টির মধ্যে  ৪টি, বিটিএমএ’র ১২৭টির মধ্যে ১টি এবং অন্যান্য ১ হাজার ১৮৬টি কারখানার মধ্যে ২৫টি কারখানায় সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এপ্রিলের ১৫ দিনের বেতন দেয়া হয়নি। 

এছাড়া বিজিএমইএ’র ৮টি, বিকেএমইএ’র ৪টি, বিটিএমএ’র ১টি এবং অন্যান্য ১৫টি কারখানায় কোনও ঈদ বোনাস দেয়া হয়নি। রোববার সকল কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×