ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

কল্পনা দত্ত: জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

কল্পনা দত্ত: জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ | ০৯:৫৬ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩ | ০৬:১১

১৮ ই এপ্রিল ইংরেজি ১৯৩০ সাল। মাস্টারদা সূর্য সেনের ডাকে অভিজাত ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করলো প্রীতিলতা ওয়েদ্দেদার ও কল্পনা দত্ত। আমরা যদি একটু পিছু ফিরে সেই সময়টাকে দেখি তাহলে স্তম্ভিত হয়ে যেতে হয়। এমন একটা সময় যে সময়ে মেয়েদের ভাগ্যে লেখা থাকতো শুধু বিয়ে করে সেবা করা আর সন্তানের জন্ম দেওয়া।

অনেকটা গৃহপালিত পশুদের মত। কলকাতার মত শহরে যদিওবা একটু সুযোগ মিলতো বাংলার গ্রামে মেয়েদের তখন অস্ত্র হাতে তোলা দূরে থাক বই হাতে থাকা মানেও অপরাধ ছিল। কল্পনা দত্ত পথেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে অন্তরীণ হয়ে যান। ১৭ই ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ সালে পুলিশ গোটা গ্রামকে ঘিরে ফেলে যেখানে তিনি লুকিয়ে ছিলেন স্বয়ং মাস্টারদা সূর্য সেনের সাথে। মাস্টারদা ধরা পড়ে যান কিন্তু কল্পনা দত্ত পুলিশকে বোকা বানিয়ে পালিয়ে যান। তিনি অবশেষে ধরা পড়েন ১৯ মে ১৯৩৩ সালে। তার যাবজ্জীবন জেলের শাস্তি হয়। ১৯৩৯ সালে তার মুক্তি হয়।

১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়াতে যোগদান করেন। ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষের সময়ে তিনি রিলিফ ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৯৪৬ সালের বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির নির্বাচনে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম আসনে লড়াই করেন কিন্তু পরাজিত হোন। 

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইনস্টিটিউটের কর্মী ছিলেন এবং সেখান থেকেই অবসর নেন। ১৯৪৩ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারি পূরণ চান্দ জোসির (P C Joshi) সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হোন। “চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণকারীদের স্মৃতিকথা” নামে তিনি একটি বই লেখেন। ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ সালে কলকাতায় তার জীবনাবসান ঘটে। 

আজকের দিনে ২৭ জুলাই ১৯১৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালি উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। আমরা যাদের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছি তাদের কথা স্মরণ করে আজও আমাদের নির্বাক থাকতে হয়। আমরা কি বহন করার যোগ্য হতে পেরেছি?

আরও পড়ুন

×