ঢাকা বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

কীভাবে, কোথায় থেকে এলো এই সেমাই?

কীভাবে, কোথায় থেকে এলো এই সেমাই?

ফাইল ছবি

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ মে ২০২২ | ১৩:২২ | আপডেট: ০২ মে ২০২২ | ১৩:৪৭

আমাদের দেশে ঈদের খাবারের মধ্যে সেমাই হচ্ছে আইকন। দুধ, চিনি, বাদাম ও এলাচ দিয়ে রান্না করা লাচ্ছা ও বাংলা সেমাই কম-বেশি সবার কাছেই পছন্দের খাবার। ঈদের দিন সকালে খাবার টেবিলে মজাদার এই সেমাই পরিবেশন করা আমাদের ঐতিহ্য। অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রেও দারুণ ভূমিকা রাখে সেমাই।

সেমাই শব্দের গল্প: বাংলা অভিধানে ‘সেমাই’ শব্দকে কোথাও দেশি, আবার কোথাও হিন্দি বলা হয়েছে। তবে ভাষা পণ্ডিত সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, গ্রিক শব্দ ‘সেমিদালিস’ থেকে সেমাই শব্দের উৎপত্তি। গ্রিক শব্দ সেমিদালিসের অর্থ ময়দা। যা সংস্কৃত ভাষায় ‘সমিদা’ রূপ ধারণ করে। সমিদা থেকে সেমাই, সেমিয়া, সেমাইয়া ইত্যাদি শব্দের উদ্ভব। আর সেমাইয়ের ইংরেজি নাম ‘ভারমিসেলি’। যা ইতালীয় শব্দ ‘ভারমিয়েল্লি’র ইংরেজি রূপ।

লাচ্ছা সেমাইয়ের উৎপত্তি: ঈদের সময় বেশ গুরুত্বপূর্ণ খাবারের মধ্যে থাকে লাচ্ছা সেমাই। এর উৎপত্তি ও নাম নিয়ে মতভেদ রয়েছে। আরবি শব্দ ‘লম্বুতদার’ রাজধানী ঢাকার আদি নাগরিকদের মুখে ‘লাচ্ছাদার’ উচ্চারিত হতো। দুটো শব্দেরই অর্থ ‘সুস্বাদু’। এ জন্য ধারণা করা হয়, লাচ্ছাদার শব্দ থেকে ‘লাচ্ছা’ নাম এসেছে। বলা হয়ে থাকে, ঢাকায় আসা অবাঙালি কিংবা আদি ঢাকাইয়ারা প্রথম তৈরি করে এই লাচ্ছা সেমাই।

লম্বা বাংলা সেমাই: লাচ্ছা সেমাই জনপ্রিয় হওয়ার আগে লম্বা সেমাই বেচাকেনা হতো। আরেক নাম ‘বাংলা সেমাই’। একসময় অতিথি আপ্যায়নে বাংলা সেমাইয়ের বেশ কদর ছিল। আর দাম কম হওয়ায় খোলা লম্বা সেমাই ঈদের খাবারের মধ্যে অন্যতম ছিল। কিন্তু এখন সেই লম্বা সেমাইয়ের চাহিদা কম।

যেভাবে তৈরি হয়: আধুনিক সময়ে প্রায় কারখানায় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় সেমাই। এরপর প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয়। কারিগররা প্রথমে সরু ফালি করে ময়দার মণ্ড কাটেন। সেগুলো গোলাকার করে লাচ্ছার খামি তৈরি করা হয়। তারপর তেল ও ডালডা দিয়ে ভাজলেই সেমাই হয়। ভাজার পর তেল ঝরানোর জন্য স্তূপ করে রাখা হয়। আবার সেই ঝরে পড়া গরম তেলে খামি ভাজা হয়।

 আরও পড়ুন: দীর্ঘক্ষণ চ্যাটিং করে শরীরের ভয়ানক কোনো ক্ষতি করছেন না তো?

ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে শতাধিক কারখানায় সেমাই তৈরি হয়ে থাকে। এর মধ্যে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সেমাই প্যাকেটজাত করার পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করেন তা। একসময় বছরের বারো মাসই সেমাই বেচাকেনা হতো। কিন্তু এখন মাত্র তিন মাস সেমাই বিক্রি হয়। রমজানের ঈদের আগে দুই মাস ও কোরবানির ঈদের সময় এক মাস। তবে রমজান আসলে সেমাই তৈরির চাহিদা বেড়ে যায়।

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্যাকেটজাত লম্বা সেমাই এবং লাচ্ছা সেমাই পাওয়া যায়। এসব সেমাই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কে বিক্রি হয় বাজারে। সাধারণত প্রতি কেজি খোলা বাংলা সেমাই বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হয় ১৭০ টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের ১৮০ থেকে ২০০ গ্রামের প্যাকেট পাওয়া যায়। যা ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

আরও পড়ুন

×